পাইরেটেড বা নাল্ড সফটওয়্যার বলতে ব্যবহারকারীরা সাধারণত ডেস্কটপ সফটওয়্যারগুলোকেই বুঝে থাকে, কিন্তু অনলাইনে বা ওয়েব সার্ভারে চালানো হয় এমন অনেক এপ্লিকেশন, স্ক্রিপ্ট, থীম-প্লাগিন্সও এর পরিধির ভেতর পরে।
নিরাপত্তা
সফটওয়্যার পাইরেসি বা নাল সফটওয়্যার বানানোর সাথে জড়িত প্রোগ্রামাররা আইনি জটিলতার কারণে নিজেদের পরিচয় গোপন রাখে। এরা সাধারণত কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্ট্রাকচার নয় বরং ব্যক্তিগতভাবে কাজগুলো করে থাকে। যে কারণে প্রায় সময়ই পাইরেটেড সফটওয়্যার গুলো তে বাগ পরিলক্ষিত হয়। তাছাড়া সফটওয়্যার পাইরেসি সাথে জড়িতরা মনিটাইজেশন এর উদ্দেশ্যে অনেক গোপন বিজ্ঞাপনী কোড বা ইউজারদের তথ্য গ্রহণ করার স্ক্রিপ্ট সফটওয়্যারগুলোতে লুকিয়ে থাকে, যা নিঃসন্দেহে প্রাইভেসির জন্য বড় হুমকি।
আপডেট
পাইরেসি প্রতিরোধে সফটওয়্যার কোম্পানি গুলো সাধারণত আপডেটের সাথে সাথেই সফট্ওয়ারে অনাকাঙ্ক্ষিত কোডগুলো বদলে অরিজিনাল কোড দিয়ে প্রতিস্থাপন করে, ফলে সফটওয়্যারটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এটা এভয়েড করতে সফটওয়্যার পাইরেসি কারীরা সাধারণত আপডেটের অপশন বন্ধ করে রাখেন। আর একটি সফটওয়্যার এর আপডেট প্রসেস বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে হচ্ছে, পরবর্তীতে সফটওয়্যারটিতে যত ফিচার সমুহ অ্যাড হবে সবগুলো থেকে বঞ্চিত হওয়া। তাছাড়া সফট্ওয়ারে কোন বাগ থেকে থাকলে সেগুলো পরবর্তীতে সংশোধনের কোন পথ খোলা থাকে না।
পারফর্মেন্স
যেহেতু পাইরেটেড সফটওয়্যার গুলোতে গোপনীয় বিজ্ঞাপনী কোড বা ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহের গোপন কোড থাকার সম্ভাবনা প্রবল তাই অতিরিক্ত রিকোয়েস্ট ও প্রসেস সফটওয়্যারটিকে স্বাভাবিক ভাবেই ধীর করে দেয়।
তাছাড়া আপডেট প্রসেস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হার্ডওয়ার আপডেটের পাশাপাশি সফটওয়্যারটি যথোপযুক্ত প্রতিক্রিয়া করতে পারেনা। অথবা সফটওয়্যার কোম্পানি তাদের পুরাতন সফট্ওয়ারে কোন ত্রুটি থাকলে তা নতুন আপডেট সারানোর যে প্রচেষ্টা বিঘ্নিত হয়।
পেশাজীবীরা ও শিল্পটি
পাইরেটেড সফটওয়্যার প্রস্তুতকারীরা সাধারণত জনপ্রিয় সফটওয়্যার গুলো কে নির্বাচন করে থাকে কিন্তু জনপ্রিয় সফটওয়্যার গুলো সব সময়ই বড় কর্পোরেটরাই প্রস্তুত করে তা নয়, অনেক সময় নতুন এবং ছোট কোম্পানিরগুলোও প্রস্তুত করে থেকে। সফটওয়্যার পাইরেসির কারণে বড় কর্পোরেটগুলো তাদের লাভের পরিমাণ কম পেয়ে থাকলেও ছোট কোম্পানিগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমনকি সময় সময় তাদের পক্ষে থেকে থাকাটাও কঠিন হয়ে যায়। ফলে অনেক জনপ্রিয় সফটওয়্যার এবং উদীয়মান সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো হারিয়ে যায়।
নৈতিক মূল্যবোধ
পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে একটি অনৈতিক কাজ, যাকে বর্তমান সময়ে ডিজিটাল চুরি বললেও ভুল হবে না। আমাদের নিজেদের নৈতিক মূল্যবোধ ঠিক রাখতে এসব পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা অবশ্য কর্তব্য। আর আমাদের ভার্চুয়াল লাইফ এর নৈতিকতা বাস্তব জীবনের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ থেকে বিচ্ছিন্ন নয়।
উপসংহার: সার্বিক বিবেচনায় পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করা শুধু প্রস্তুতকারী কোম্পানির জন্যই ক্ষতিকর তা নয় বরং ব্যবহারকারীর জন্য ক্ষতিকর। তাই আমাদের এ থেকে বিরত থাকা এবং সবার মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা উচিত।